খানা খাওয়ার দোয়া ও সুন্নাত (আদব)।
খানা খাওয়ার শুরুতে এই দোয়া পড়তে হয়-
بِسْمِ اللّهِ وَ عَلى بَرَكَةِ اللهِ
উচ্চারণঃ- বিসমিল্লাহি ও‘আলা বারাকাতিল্লাহ
অর্থ : আল্লাহর নামে তাঁর বরকতের প্রত্যাশায় শুরু করলাম।
খানা খাওয়ার শুরুতে দোয়া পড়তে ভুরে গেলে খানার মাঝে স্মরণ আসার পর এই দোয়া পড়তে হয়-
بِسْمِ اللهِ أَوَّلَه وَآخِرَه
উচ্চারণঃ- বিসমিল্লাহি আউয়্যালাহু ওয়া আখীরাহ।
অর্থ: আমি আল্লাহ তায়ালার নামে খানা খাওয়া শুরু করছি। প্রথমেও আল্লাহ তায়ালার নাম, পরিশষেও আল্লাহ তায়ালার নাম। (শামায়েলে তিরমিযী, আবু দাউদ, আহমদ, দারেমী)।
খানা খাওয়ার শেষে এই দোয়া পড়তে হয়-
اَلْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِيْ اَطْعَمَنَا وَ سَقَانَا وَ جَعَلَنَا مِنَ الْمُسْلِمِيْن
উচ্চারণঃ- আলহামদুলিল্লাহিল্লাজী আতআ‘মানা ওয়া ছাক্বানা ওয়া জাআলানা মিনাল মুসলিমীন।
অর্থ : সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদের খাইয়েছেন, পান করিয়েছেন এবং মুসলিম বানিয়েছেন।
* খাবার গ্রহণের আগে ও পরে হাত ধোয়া আবশ্যক। না হয় বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা দিতে পারে।
* রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানাহারের আগে এবং পরে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়ার আদেশ করেছেন। বর্তমানে আমরা এক হাত ধৌত করি এটা সুন্নাতের পরিপন্থী। (শামায়েল/ মুসনাদে আহমাদ ও ইবনে মাজাহ)
* দস্তরখান বিছিয়ে খাবার খাওয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা দস্তরখানা বিছিয়ে খানা খেতেন। (বোখারী শরীফ : হাদীস নং ৫৩৮৬)
* খাবার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ ও শেষে ‘আলহামদুল্লিাহ’ বলা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খানার শুরুতে বিসমিল্লাহ এবং শেষে আলহামদুলিল্লাহ পড়তেন ( এবং বলতেন, যে নেয়ামতের শুরুতে বিসমিল্লাহ এবং শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলা হয়, সে নেয়ামতের হিসাব নেয়া হবে না। (মুসলিম শরীফ, বুখারী শরীফ, ইবনে হিশাম)
* গরম খাবার ঠান্ডা হ’লে খেতে শুরু করা।
* দাঁড়িয়ে পানাহার না করা।
* ডান হাত দিয়ে খাওয়া।
* রাসুল (সা.) আজীবন ডান হাত দিয়ে খাবার খেয়েছেন। বাম হাত দিয়ে খাবার খেতে নিষেধ করেছেন তিনি।কেননা শয়তান বাম হাতে খায় ও পান করে।(তবে একান্ত প্রয়োজন হলে বাম হাতে খেতে পারবে,যেমন ডানহাত না থাকলে) ’ ( সূত্র-বুখারী, হাদিস নং: ৫৩৭৬; মুসলিম, হাদিস নং: ২০২২)
* হাত চেটে খাওয়া।
* রাসুল (সা.) খাওয়ার সময় সর্বদা হাত চেটে খেতেন। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫২৪৫)
* রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দস্তরখানায় অথবা পেয়ালা থেকে পড়ে যাওয়া খাবার তুলে খেতেন এবং বলতেন পড়ে যাওয়া লোকমা শয়তানের জন্য ছেড়ে দিওনা।
* খাবার গ্রহণের সময় কখনো কখনো প্লেট থেকে এক-দুইটি ভাত, রুটির টুকরো কিংবা অন্য কোনো খাবার পড়ে যায়। সম্ভব হলে এগুলো তুলে পরিচ্ছন্ন করে খাওয়া। [ সূত্র-তিরমিজি, হাদিস নং : ১৯১৫; ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৪০৩ ]
* রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনের থেকে খাওয়া শুরু করতেন এবং খানার মাঝে হাত দেওয়া থেকে বারণ করতেন আর বলতেন খানার মাঝে বরকত থাকে। ( বুখারী শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজা শরীফ)
* হেলান দিয়ে না খাওয়া।
কোনো কিছুর ওপর হেলান দিয়ে খাবার খেতে তিনি নিষেধ করেছেন। হেলান দিয়ে খাবার খেলে পেট বড় হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে দাম্ভিকতা প্রকাশ পায়। (সূত্র-বুখারি, হাদিস নং: ৫১৯০; তিরমিজি, হাদিস নং: ১৯৮৬)
#খাবারের দোষ-ত্রুটি না ধরা।
শত চেষ্টা সত্ত্বেও খাবারে দোষ-ত্রুটি থেকে যাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু এ নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করা নিতান্ত বেমানান। রাসুল (সা.) কখনো খাবারের দোষ ধরতেন না।পছন্দ হলে খেতেন, আর অপছন্দ হলে খেতেন না। (সূত্র-বুখারি, হাদিস নং : ৫১৯৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৩৮২)
* খাবারে ফুঁ না দেওয়া
* খাবার ও পানীয়তে ফুঁ দেওয়ার কারণে অনেক ধরনের রোগ হতে পারে। (সূত্র-ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৪১৩)
* খাবার ডান দিক থেকে খাওয়া।
* ছোটছোট লোকমা দিয়ে খাওয়া।
* ভাঙ্গা পাত্রে না খাওয়া।
দাওয়াত খাওয়ার পর এই দোয়া পড়তে হয়
اَللّهُمَّ اَطْعِمْ مَنْ اَطْعَمَنِيْ وَ اَسْقِ مَنْ سَقَانِيْ
উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা আতঈম মান আত‘আামনী ওয়া আস্কী মান সাকানী।