• Sunrise At: 5:58 AM
  • Sunset At: 6:11 PM
info@talimeislam.com +88 01975539999
আত্মবিশ্বাস:

মানবিক এই গুণটি তাঁর অধিক মাত্রায় ছিল বলেই তিনি জীবনে সফলতার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে পেরেছিলেন। যে কোন কাজের নৈপুণ্য অর্জন করা এবং সে কাজে অধিকতর কৃতকার্য হওয়ার জন্য যতটুকু আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা প্রয়োজন ছিল, তিনি তা আয়ত্ত করতে চেষ্টা করেছেন। আর এই গুণ সম্পর্কে বিশ্বাসী ঘোষণাও তিনি ইতিবাচকভাবে তাঁর নানা বক্তৃতায় দিয়েছেন।

অনুসন্ধিৎসা:

তাঁর অনুসন্ধিৎসা মূলত তাঁর জ্ঞান পিপাসার নামান্তর, যা তিনি সারা জীবন বয়ে গেছেন। যতক্ষণ না তার মানসিক চাহিদা অর্থাৎ জ্ঞান অন্বেষার পরিপূরক কিছু খুজে পেতেন, ততক্ষণ পড়াশোনার কিংবা গবেষণাধর্মী কাজের প্রেরণা অটুট থাকত তাঁর।

সত্যবাদিতা:

সত্যবাদিতা ছিল তাঁর সবচেয়ে উন্নত মানবিক গুণগুলোর একটি। কেবল ইসলামী আখলাককে বুঝে নিয়ে তা ধারণ করার চেষ্টায় নয়, বরং একটি শিক্ষিত, ভদ্র পরিবারের সংস্পর্শ ও জীবনের একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জীবনকে নির্মাণের সংগ্রাম তাঁকে কঠিন তথা সত্যের প্রতি আনুগত্য শিখিয়েছে। একথা তাঁর বিভিন্ন সময়ের স্বীকারোক্তি মূলক বক্তব্য থেকে জানা যায়।

মানববাদী ভূমিকা:

মুমিনের এটাও বড় গুণ, যা তিনি ধারণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সকলকে তিনি গভীরেভাবে ভালবাসতেন এবং সকলকে নানাভাবে সাহায্য করতেন। বিশেষত: (বাসস্হানের) প্রতিবেশীদের খোঁজ নেওয়া তাঁর একটা নিয়মিত অভ্যাস ছিল। তিনি যেখানে থাকতেন, সেটা হিন্দু প্রধান এলাকা ছিল। বন্যা কিংবা যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাঁকে খাবার, অর্থ প্রভৃতি দিয়ে সাহায্য করতে দেখা গেছে। মানুষের বিপদ বুঝে নেয়ার ক্ষমতাও ছিল তাঁর, সাহায্য চেয়ে কেউ কখনও ফিরে যায়নি তাঁর কাছ থেকে। বাড়িতে কেউ ভিক্ষা করতে এলে ভিক্ষুকের শারীরিক সামর্থ অনুযায়ী অর্থ সাহায্য দিয়ে তিনি তাকে পুণর্বাসনের চেষ্টা করতেন, যেন তাকে আর ভিক্ষা করতে না হয়। এককথায়, গভীর সংবেদনশীল মন ছিল তাঁর; যা তাঁকে মানববাদী ভূমিকায় উর্ত্তীণ করেছিল।

বন্ধুত্বসুলভ আচরণ:

পরিবার এবং সমাজের মানুষের সাথে তাঁর সহজ গুণ ছিল বন্ধুতাপূর্ণ আচরণ। একটি ছোট শিশুর মনোভঙ্গি বুঝে নিয়ে তার সঙ্গে মিশতে ও তার বন্ধু হতে পারতেন তিনি। বিশিষ্ট লেখক, দার্শনিক ডেল কার্নেগীর দর্শণ তাঁকে আকৃষ্ট করেছিল। এছাড়া সর্বোপরি, হুজুর (সা:) এর স্বভাব গুণ আত্মস্থ করতে চেয়েছিলেন তিনি। দাম্পত্য জীবনে ও তিনি অত্যন্ত সুখী ছিলেন এই বিশেষ গুণটির কারণে। তাঁর সহধর্মিনীর স্মৃতিচারণ থেকে জানা যায় যে, তিনি তাঁর (সহধর্মিণীর) মতামত ও পরামর্শকে গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করেছেন এবং সব সময় তাঁকে বুঝতে চেয়েছেন মানসিকভাবে।

অন্যের ব্যক্তিত্ব গড়নে ভূমিকা:

অন্যের মনোভঙ্গি গভীর ভাবে উপলব্ধি করে তার স্বভাব প্রবণতা, অবস্থান বুঝে নিয়ে তাকে গড়ে তোলার একটা প্রয়াস পেতেন তিনি। পরিবারে বা পরিবারের বাইরে যে কোনো মানুষের বেলায় এটা সত্য হয়েছিল। যেহেতু নিজেকে ভালভাবে জানার প্রবণতা ছিল তার; সেই সূত্রে অপরকে বোঝার ক্ষমতা তৈরি হয়েছিল। শিশুদের শাসন করতেন ভিন্ন প্রক্রিয়ায়। যাতে তারা তাঁকে বন্ধু মনে করে।

অঙ্গীকার রক্ষা করা:

কথা দিয়ে কথা রক্ষা করা মুমিনের অন্যতম বড় গুণ, তাঁর ও সেটি ছিল। ছোট শিশুকেও যদি কোনো কথা দিতেন, সেটা শিশুটি ভুলে গেলেও তিনি তা ভুলতেন না। বড়দের ক্ষেত্রে তো নয়ই। কথা রক্ষা করতে না পারলে কথা তিনি দিতেন না, কাউকে সময় দিলেও সেই নির্দিষ্ট সময়েই দেখা করতেন।

সমাজ সেবা:

মাওলানা মুহাম্মাদ আযহারুল ইসলাম সিদ্দিকী (রহ:) ছিলেন মানবপ্রেমের দীক্ষায় উদ্দীপ্ত। মানুষের উপকার করতে গিয়ে তিনি হিন্দু-মুসলিম ভেদ করতেন না। কন্যা দায়গ্রস্থ পিতার ‍দুশ্চিন্তা মোচন, অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীর লেখাপড়া চালিয়ে নেয়া, অর্ধাহারে-অনাহারে থাকা মানুষের ক্ষুধার জ্বালা মেটানো, শীতার্তের কষ্ট মোচন, সহায়-সম্বলহীনের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন তাঁকে গরীব-দুঃখী-মেহনতী মানুষের কাছে করে দিয়েছিল পরম বন্ধুর আসন। দুঃস্থের সেবায় লাভ করতেন স্রষ্টা সেবায় প্রতিকী তৃপ্তি। নিজের বাড়ীর পাশে প্রতিষ্ঠানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন তিনি।

 

 

 

Designed by Mohd Nassir Uddin