তায়াম্মুম করার নিয়ম
পানির অভাবে বা পানি ব্যবহারে শারীরিক ক্ষতি বা রোগ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকলে পবিত্র হওয়ার জন্য অযূর পরিবর্তে তায়াম্মুম করা যায়। শুকনা মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করা উত্তম। পাক মাটি, পাথর, ইট, মাটির হাঁড়ি-পাতিল, বাসনইত্যাদি মাটি জাতীয় জিনিস দ্বারা তায়াম্মুম করা যায়।
তায়াম্মুমের নিয়ত
-نويت أن أتيمم لرفع الحدث واستباحة للصلوة وتقربا إلى الله تعالى
অর্থ: আমি নাপাকী দূর করার জন্য, নামাযের বিশুদ্ধতার জন্য এবং আল্লাহ্ পাকের নৈকট্য লাভের জন্য তায়াম্মুম করছি।
তায়াম্মুম করার নিয়ম
১. প্রথম নিয়ত করতে হবে।
২.দুই হাত মাটিতে বা ঐ জাতীয় কিছুতে বুলিয়ে হাত একটু ঝেড়ে নিয়ে (অযূতে যে পরিমাণ স্থান ধুইতে হয়) একবার মুখমন্ডল মাসেহ করবে।
৩. দ্বিতীয়বার একইভাবে হাতের পিছন দিক আঙুলের মাথা হতে কনুইর ওপর পর্যন্ত একবার মুছবে। আর বাম হাতের বাকি অর্ধ তালু এবং বৃদ্ধ ও তর্জনি আঙ্গুলি দ্বারা ডান হাতের সম্মুখভাগ পিছন ভাগের মত সম্পূর্ণ মুছে ফেলবে। অত:পর ঐরূপভাবে ডান হাত দিয়ে বাম হাত মুছবে।
৪. দুই হাতের আঙুলের মধ্যের ফাঁকে আঙুল দিয়ে খিলাল করবে।
তায়াম্মুমের ফরয তিনটি
১. নিয়ত করা, ২. অযূর নির্ধারিত মুখমন্ডল মোছা, ৩. অযূর নির্ধারিত দুই হাত কনুই সহ মোছা।
তায়াম্মুমের সুন্নাত
১। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম বলে তায়াম্মুম আরম্ভ করা।
২। দুই হাতের তালু মাটিতে মেখে সম্মুখে ও পিছনে একটু টানা ।
৩। হাত মাটিতে রাখা অবস্থায় আঙুল ফাঁক করা।
৪ । মাটি থেকে হাত উঠিয়ে হাত ঝেরে ফেলা।
৫। তারতীব বজায় রাখা।
৬। আগে মুখমন্ডল ও পরে হাত মোছা। দুই অঙ্গ মোছার মধ্যে অধিক বিলম্ব না করা।
তায়াম্মুম ভঙ্গ হবার কারণ
১. যে কারণে অযূ নষ্ট হয়, সে কারণে তায়াম্মুমও নষ্ট হয়।
২. নিয়ত না করা।
৩. মাটিতে দু’বার হাত থাবড় না মারা ।
৪. দুই অঙ্গের কোন স্থানে মুছতে বাকি থাকা ।
৫. পানি প্রাপ্ত হওয়া বা পানি ব্যবহারের বাধা দূর হওয়া।
৬. নাপাক জিনিস দ্বারা তায়াম্মুম করা।
তায়াম্মুমের মাসআলা
১. অযূ ও গোসলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন তায়াম্মুম দরকার হয় না। এক তায়াম্মুমে অযূ ও গোসলের কাজ সমাধা হয়। তবে নিয়ত আলাদা আলাদা করতে হয়।
২. একখন্ড মাটি বা অন্য কোন বস্তু দ্বারা অনেকে তায়াম্মুম করতে পারে তাতে উক্ত মাটি বা বস্তু নাপাক হবে না।
৩. কিছু পরে পানি পাওয়া যাবে এমন সম্ভাবনা থাকলে নামাযের প্রথম বা মধ্যম ওয়াক্তে তায়াম্মুম দ্বারা নামায না পড়ে শেষ ওয়াক্তের সময় পর্যন্ত বিলম্ব করে নামায পড়বে। তখন পানি পাওয়া গেলে অযূ বা গোসল করে নামায পড়বে। আর না পাওয়া গেলে তায়াম্মুম করে নামায পড়বে।
সংগ্রহঃ নামায শিক্ষা কিতাব থেকে। লেখকঃ হযরত মাওলানা মুফতি আল্লামা ডক্টর মুহাম্মাদ মনজুরুল ইসলাম সিদ্দিকী দাঃবা, পীর সাহেব, তালিমে ইসলাম, মানিকগঞ্জ, বাংলাদেশ। মূল কিতাবটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
Lorem Ipsum