অযুর দোয়া ও সুন্নাত (আদব)।
অযুর পূর্বে দোয়া হল, বিসমিল্লাহ বলে অযু শুরু করা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
لا وُضُوءَ لِمَنْ لَمْ يَذْكُرْ اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهِ
যে ব্যক্তি অযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলেনি, তার অযু পরিপূর্ণ হয়নি। (তিরমিযি ২৫)
অযু করার শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ার কথা হাদীসে এসেছে। [ আবু দাউদ-১/১৪, তিরমিজী-১/১৩, কিতাবুল আজকার-২/২ ]
আর অযুর মাঝে পড়বে-
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي ، وَوَسِّعْ لِي فِي دَارِي ، وَبَارِكْ لِي فِي رِزْقِي
উচ্চারণ– আল্লাহুম্মাগফির লী যাম্বী ওয়া ওয়াসসি’ লী ফী দারী ওয়া বারিক লী ফী রিযকী।
অর্থ ; হে আল্লাহ, তুমি আমার পাপ ক্ষমা করে দাও, আমার গৃহে (বাড়িতে )প্রশস্ততা দান কর এবং আমার রিজিকে বরকত দান কর।
[ সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৯৯০৮, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-৫০৮০, মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৭২৭৩, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৯৩৯১ ]
হাদীস শরীফে আছে যে অজুর শেষে কালেমায়ে শাহাদাত পড়বে তার জন্য বেহেশতের আটটি দরজা খুলে যাবে।
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
উচ্চারণ– আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহূ, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।
{সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৯৯১২, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৬৯, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-৭১৬, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৩৪, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২৬০৭৪}
কালেমায়ে শাহাদাত পড়বে এর পর নিম্নের দোয়া পড়বে-
اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَوَّابِينَ ، واجْعَلْني مِنَ المُتَطَهِّرِينَ
উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মাজ্ ‘আলনী মিনাত্ তাওওয়া-বীনা, ওয়াজ‘আলনী মিনাল্ মুতাত্বহহিরীন।
হে আল্লাহ! আপনি আমাকে অধিক মাত্রায় তাওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং আমাকে পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন।’ (তিরমিযি শরীফ ৫৫, মিশকাত শরীফ)
ওযুর চার ফরয:
১. সমস্ত মুখমন্ডল কপালের উপরিভাগের চুলের গোড়া হইতে থুতনী পর্যন্ত, এক কর্নের লতি থেকে অন্য কর্নের লতি পর্যন্ত ধৌত করা।
২.উভয় হাত কনুইসহ ধৌত করা।
৩.চারভাগের একভাগ মাথা মাসেহ করা ( ঘন দাঁড়ি থাকিলে আঙ্গুলী দ্বারা খেলাল করা ফরয )।
৪.উভয় পা টাখনু গিরা সহকারে ধৌত করা ।
অযুর ১৪টি সুন্নাত
১. নিয়ত করা।
২. বিসমিল্লাহ্ বলে ওযু শুরু করা।
৩. হাতের আঙ্গুল খিলাল করা।
৪. উভয় হাত কবজি পর্যন্ত ধৌত করা।
৫. মিসওয়াক করা।
৬. তিনবার কুলি করা।
৭. তিনবার নাকে পানি দেয়া।
৮. সম্পূর্ন মুখ মন্ডল তিনবার ধৌত করা।
৯. উভয় হাতের কনুইসহ তিনবার ধৌত করা।
১০. সমস্ত মাথা একবার মাসেহ করা।
১১. টাখনু সহ উভয় পা তিবার ধৌত করা।
১২. পায়ের আঙ্গুল খিলাল করা।
১৩. এক অঙ্গ শুকানোর পূর্বে অন্য অঙ্গ ধৌত করা।
১৪. ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ওযুর কাজ গুলো সম্পূর্ন করা।
ওযু ভঙ্গের কারণ সমূহ
১. পায়খানা প্রস্রাবের রাস্তা দিয়া কোন কিছু বের হওয়া
২. মুখ ভরে বমি হওয়া
৩. শরীরের কোন জায়গা হতে রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া
৪. থুথুর সাথে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া
৫. চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া
৬. পাগল, মাতাল, অচেতন হওয়া এবং
৭. নামাযে উচ্চস্বরে হাসা।