হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী রহ.-এর কারামত
আসর মদিনায়, মাগরিব মক্কায়
হযরত হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী রহ.-এর কাছে এক ব্যক্তি আগমন করল। বলল, হযরত! এমন কোন রাস্তা আছে কি? যদ্বারা মক্কায় জোহর পড়ে মদিনায় গিয়ে আসর পড়া যায়? উত্তরে হযরত বললেন- হ্যা,এমন রাস্তাও থাকতে পারে। কিছুদিন পর হাজী সাহেব ঐ ব্যক্তিকে বললেন, চলো একটু ঘুরে আসি। এ বলে উভয়ে মক্কা থেকে জোহর পড়ে বের হলেন এবং নিকটবর্তী একটি পাহাড়ে আরোহন করলেন। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো,তারা ঐ পাহাড় থেকে অবতরণ করতে না করতেই মদিনায় এসে পৌঁছে গেলেন। খানিক পর আছরের সময় হলে সেখানে নামাজ পড়ে নিলেন। তারপর
পুনরায় পাহাড়ে আরোহন করে পূর্বের ন্যায় ঐ পাহাড় থেকে নামার সাথে সাথে দেখলেন, তারা মক্কায় পৌঁছে গেছেন। ততক্ষণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে মাগরিবের নামাজ আদায় করলেন। পরে একদিন ঐ ব্যক্তি সেই পাহাড় ও রাস্তা ভালো করে দেখে নিয়ে একা একা গেল। তারপর পাহাড়ে আরোহন করল। কিন্তু মদীনার সন্ধান পেল না। তখন সে বুঝতে পারল, আসলে এটা হযরতের কারামাত ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
[মালফুযাতে ফকীহুল উম্মত, পৃষ্ঠা: ১৮৯]
নামাজও পড়ল, নাচ দেখাও ছেড়ে দিল
একদা এক লোক হযরত হাজী ইমদাদুল্লাহ মক্কী রহ.এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বায়আত হওয়ার আবেদন করল। সেই সাথে দুটি শর্তও জুড়ে দিল। প্রথম শর্তটি হলো, নামাজ পড়তে পারবে না। আর দ্বিতীয় শর্তটি হলো, নাচ দেখা থেকে বিরত থাকতে পারবে না। হযরত তাকে এই দুই
শর্তের সাথেই বায়আত করে নিলেন। বায়আত হওয়ার পর নামাজের সময় হলে লোকটির গোটা দেহে খুঁজলি দেখা দিল। বিশেষ করে অজুর অঙ্গগুলোতে খুব বেশি খুঁজলি হলো। ফলে সে পেরেশান হয়ে ওজুর অঙ্গগুলো ধৌত করল। শুধু বাকী
রইল মাথা মাসেহ করা। তখন লোকটি মনে মনে বলল, অজুর অঙ্গগুলো তো ধোয়া হয়ে গেল,শুধু বাকি রয়ে গেল, মাথা মাসেহ করা। আচ্ছা! মাসেইটাও সেরে নেই, যাতে অজু হয়ে যায়। এ কথা ভেবে সাথে সাথে সে মাসেহ করে নিল। এতে তার অর্ধেক খুঁজলি ভালো হয়ে গেল। এরপর লোকটি চিন্তা করল, ওজু যখন হয়ে গেল,তো নামাজটাও আদায় করে ফেলি। এ বলে সে নামাজও পড়ে নিল । আর এতে তার সমস্ত খুঁজলি ভালো হয়ে গেল।
পরবর্তী কয়েকটি নামাজের সময়ও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। এতে সে মূল ঘটনা বুঝতে পারল এবং বলতে লাগল, হাজী সাহেব তো আমার উপর ভালো এক সেপাই নিযুক্ত করে দিয়েছেন! মোটকথা এভাবে সে পাক্কা নামাজী হয়ে গেল ।
কিছুদিন পর সে হিন্দুস্থানে ফিরে এসে বলল, নামাজ না হয় পড়লাম,কিন্তু নাচ দেখা তো আমি কিছুতেই ছাড়তে পারব না। তাই আমি নাচ দেখতে থাকব আর নামাজের সময় হলে মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে আসব। কিন্তু প্রথমবার যখন সে নাচ দেখতে যাওয়ার মনস্থ করল, তখন তার অন্তরে জাগল- বড়ই লজ্জার কথা যে, আমি চোখ দিয়ে নাচ দেখব,
আবার ঐ চোখ নিয়ে মসজিদে আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিব! অবশেষে লোকটি নাচ দেখাও জনমের জন্য ছেড়ে দিল। [সূত্র : আপবীতি, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ও ২৩৭]
Lorem Ipsum