হেদায়েত, তাকওয়া-পরহেযগারী, দুশ্চিরত্র হইতে হেফাযত ও ধন-সম্পদ লাভের দোয়া
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে-মাসউদ (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দোয়া করিয়াছেন- الله اتى اشعلك الهدى والتقى والتقان والخلي (আল্লাহুম্মা ইন্নী- আছআলুকাল হুদা ওয়াত্তু-কা ওয়াল আফা-ফা ওয়াল গিনা-) অর্থ : আয় আল্লাহ্, আমি আপনার নিকট হেদায়েত, তাকওয়া-পরহেযগারী, দুশ্চরিত্র হইতে হেফাযত ও ধন- সম্পদ প্রার্থনা করিতেছি। (জাওয়াহেরুল বােখারী, ৫৭৫ পৃষ্ঠা)
দ্বীনের উপর অটল থাকার দোয়া
হযরত শাহর বিন হাওশাব (রা.) বর্ণনা করেন যে, আমি হযরত উম্মে-ছালামা রাযিয়াল্লাহু আনহা-কে জিজ্ঞাসা করিলাম যে, হে উম্মুল-মাে’মিনীন! হুযূর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম যখন ঘরে অবস্থান করিতেন তখন তিনি অধিক সময় কোন দোয়া করিতেন? তিনি বলিলেন, হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম অধিকাংশ সময় এই দোয়া করিতেন- ياقب القلوب ثبت قلبي على دينك উচ্চারণঃ ইয়া মুক্বাল্লিবাল কুলুব ছাব্বিত কৃলবী ‘আলা দীনিক।
“সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি” পাঠ করা । (১০০ বার) -[সহীহ মুসলিম]
যে ব্যক্তি সকালে ১০০ বার এবং সন্ধ্যায় ১০০ বার এই তাসবীহ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন তার চাইতে উত্তম আমল নিয়ে আর কেউ আসতে পারবে না। তবে, ঐ ব্যক্তি ব্যতীত, যিনি অনুরূপ তাসবীহ পাঠ করেছে অথবা তার চাইতে বেশি আমল করেছে। “সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি” পাঠ করা । (১০০ বার) -[সহীহ মুসলিম]
চারজন দাস মুক্ত করার সমান সওয়াব পাওয়ার আমলঃ (১০ বার পড়ুন) সকাল ও সন্ধ্যায়
চারজন দাস মুক্ত করার সমান সওয়াব পাওয়ার আমলঃ (১০ বার পড়ুন) সকাল ও সন্ধ্যায় لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَـرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অহ্দাহু লা শারীকা লাহ, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আ’লা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর’ দিনে দশবার পাঠ করবে,
দুনিয়া ও আখেরাতের যেকোনো টেনশান বা দুঃশ্চিন্তা এবং মানসিক অস্থিরতা থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমল
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় ৭ বার এই দুয়া পাঠ করবে আল্লাহ্ তার সকল চিন্তা, উৎকণ্ঠা ও সমস্যা মিটিয়ে দেবেন”। [হিসনুল মুসলিম ১৩২-১৩৩ নাম্বার পৃষ্ঠা। সুনান আবূ দাউদ, হাদীস ৫০৮১] উল্লেখ্য এই দুয়াটা সুরা তাওবার সর্বশেষ ১২৯ নাম্বারে আয়াতে আল্লাহ তাআ’লা পড়ার জন্য বলেছেন। حَسْبِيَ اللهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ উচ্চারণঃ
কিয়ামতের দিন আল্লাহর সন্তুষ্টি বা জান্নাত পাওয়ার জন্য সহজ আমল
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ (তাঁর বান্দাদের সাথে) ওয়াদা করেছেন যে, যে ব্যক্তি প্রত্যেক দিন সকালে ৩ বার ও সন্ধ্যায় ৩ বার এই দুআ পড়বে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্ট থাকবেন”। [হিসনুল মুসলিম, পৃষ্ঠা ১৩৮] رَضِيْتُ بِاللهِ رَبـاًّ، وَبِاْلإِسْلاَمِ دِيْنـًا، وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيـًّا উচ্চারণঃ রদ্বীতু বিল্লা-হি রব্বান, ওয়াবিল ইসলা-মি দ্বীনান, ওয়াবি মুহা’ম্মাদিন সাল্লাল্লা-হু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামা নাবিয়্যান। (৩
মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া ও সুন্নাত (আদব)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মসজিদ থেকে বের হতেন তখন প্রথমে বিসমিল্লাহ পাঠ করতেন। অতঃপর দরূদ শরীফ পড়বে- আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ ( অন্য যে কোন দরূদ শরীফ পড়তে পারবেন) অতঃপর এ দোয়া পড়বে- اَللّٰهُمَّ اعْصِمْنِي مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা‘সিমনী মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম। অর্থঃ হে আল্লাহ! আমাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে রক্ষা কর। [সহীহুল জামে’ ৫২৮] অতঃপর
মসজিদে প্রবেশ করার দোয়া ও সুন্নাত (আদব)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশের সময় প্রথম বিসমিল্লাহ পড়তেন। [ ইবনে মাজা শরীফ ] মসজিদে প্রবেশের সময় প্রথমে বাম পায়ের জুতা খুলে সে জুতার উপর পা রাখবে, অতঃপর ডান পায়ের জুতা খুলে উক্ত পা মসজিদে প্রবেশ করাবে। অতঃপর দরূদ শরীফ পড়বে- بِسْمِ اللهِ، وَالصَّلَاةُ وَسَّلَامُ عَلٰى رَسُولِ اللهِ، আসসলাতু ওয়াচ্ছালামু আলা রাসূলিল্লাহ অথবা আল্লাহুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা
আল কুরআনুল কারীম থেকে সংগৃহীত কতিপয় দোয়া ( রাব্বানা-রাব্বি )
رَبَّنا آتِنا فِي الدُّنيا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنا عَذابَ النّارِ (১) রাব্বানা আতিনা ফিদ্ দুন্ইয়া হাসানাতাও ওয়াফিল্ আখিরাতি হাসানাতাও ওয়া ক্বিনা ‘আজাবান্নার্। অর্থঃ হে আমার প্রতিপালক!আমাদিগকে ইহলোকেও কল্যাণ দান করুন এবং পরলোকেও কল্যাণ দান করুন এবং আমাদিগকে দোযখের আযাব হইতে রক্ষা করুন। সূরা আল-বাক্বারাহ্: ২০১ رَبَّنا لا تُزِغ قُلوبَنا بَعدَ إِذ هَدَيتَنا وَهَب لَنا مِن لَدُنكَ رَحمَةً ۚ إِنَّكَ
সাইয়েদুল ইসতেগফার
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহ্দিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিন শাররি
সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু‘আ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসছআলুকাল ‘আফিয়াতা ফিদদুনইয়া- ওয়াল আখিরাহ। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট দুনিয়া ও আখিরাতের সুস্থতা ও কল্যাণ কামনা করি। সুস্বাস্থ্যের জন্য দু‘আ করা সুন্নাত। সুস্বাস্থ্য আল্লাহ পাকের বড় নিয়ামত। হাদীসে পাকে বর্ণিত আছে, কিয়ামতের ময়দানে সর্বপ্রথম স্বাস্থ্যের কথা প্রশ্ন করবেন, তুমি তোমার স্বাস্থ্যকে কোন কাজে লাগিয়েছিলে। (তিরমিযী শরীফ)
রাত্রিতে ঘুমাতে যাওয়ার দোয়া ও সুন্নাত(আদব )
* অযু অবস্থায় ঘুমানো সুন্নাত। [ যাদুল মা‘আদ ] * শয়নের পূর্বে কাপড় দ্বারা বিছানা ঝেড়ে নেয়া সুন্নাত। [ যাদুল মা‘আদ ] * শয়নের পূর্বে কাপড় পরিবর্তন করে নেয়া সুন্নাত। [ যাদুল মা‘আদ ] * শয়নের পূর্বে তিনবার করে উভয় চোখে সুরমা দেয়া সুন্নাত। [ বুখারী শরীফ ] * শয়নের পূর্বে বিসমিল্লাহ বলে নিম্নের কাজগুলো করা সুন্নাত। ১/ ঘরের দরজা
বাহির হতে ঘরে প্রবেশ করার দোয়া ও সুন্নাত (আদব) ।
বাইরে থেকে ঘরে আসার পর নিম্নোক্ত দোয়া পড়া এবং ঘরের লোকদের উদ্দেশে সালাম দেওয়া সুন্নত। আবূ মালিক আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশ করে, তখন সে যেন বলেঃ – اَللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلِجِ وَخَيْرَ الْمَخْرَجِ، بِسْمِ اللَّهِ وَلجْنَا وَ بِسْمِ اللَّهِ خَرَجْنَا، وَعَلَى اللَّهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا উচ্চারনঃ
ঘর হতে বের হওয়ার দোয়া ও সুন্নাত (আদব)
মসজিদে বা অন্য যে কোনো স্থানে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে এই দোয়া পড়া সুন্নাত। بسم الله توكلت على الله لا حول ولا قوة الا بالله . উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি। অর্থ : আমি আল্লাহর নাম নিয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে বের হচ্ছি। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য আর কারাে কোনাে শক্তি নেই।–(আবু
খানা খাওয়ার দোয়া ও সুন্নাত (আদব)।
খানা খাওয়ার শুরুতে এই দোয়া পড়তে হয়- بِسْمِ اللّهِ وَ عَلى بَرَكَةِ اللهِ উচ্চারণঃ- বিসমিল্লাহি ও‘আলা বারাকাতিল্লাহ অর্থ : আল্লাহর নামে তাঁর বরকতের প্রত্যাশায় শুরু করলাম। খানা খাওয়ার শুরুতে দোয়া পড়তে ভুরে গেলে খানার মাঝে স্মরণ আসার পর এই দোয়া পড়তে হয়- بِسْمِ اللهِ أَوَّلَه وَآخِرَه উচ্চারণঃ- বিসমিল্লাহি আউয়্যালাহু ওয়া আখীরাহ। অর্থ: আমি আল্লাহ তায়ালার নামে খানা খাওয়া শুরু করছি।
অযুর দোয়া ও সুন্নাত (আদব)।
অযুর পূর্বে দোয়া হল, বিসমিল্লাহ বলে অযু শুরু করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, لا وُضُوءَ لِمَنْ لَمْ يَذْكُرْ اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهِ যে ব্যক্তি অযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলেনি, তার অযু পরিপূর্ণ হয়নি। (তিরমিযি ২৫) অযু করার শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ার কথা হাদীসে এসেছে। [ আবু দাউদ-১/১৪, তিরমিজী-১/১৩, কিতাবুল আজকার-২/২ ] আর অযুর মাঝে পড়বে- اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي ،
টয়লেট এ যাওয়া এবং বের হওয়ার দোয়া ও সুন্নাত (আদব)।
হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন সময় ও স্থানের জন্য যেসব দোয়া উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে টয়লেটে প্রবেশ করা ও বের হওয়ার দোয়া। সুন্নত মেনে টয়লেটে প্রবেশ করা ও বের হওয়ার অনেক ফজিলত রয়েছে। টয়লেটে প্রবেশ করার দোয়া: ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর প্রাকৃতিক প্রয়োজনে মানুষকে টয়লেটে যেতে হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানা পেশাবের প্রয়োজনে টয়লেটে
ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার দোয়া ও সুন্নাত (আদব)।
রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া মাত্র উভয় হাত দ্বারা মুখমন্ডল ও চক্ষুদ্বয়কে হালকাভাবে মরদন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ( তিরমীজি শরীফ) ঘুম ত্যাগ করে তিনবার আলহামদুলিল্লাহ এবং একবার কালিমায়ে তায়্যিবাহ পাঠ করতঃ হজরত হুযাইফাহ রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ঘুম থেকে জাগ্রত হতেন, তখন বলতেন- الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ